জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি রচনার জন্য ছাত্রজনতা আবারও রাজপথে নামবে- মাও ইয়াছিন আরাফাত

মুহাম্মদ আহসান উল্যাহ কুমিল্লা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা-১০ (লালমাই-নাঙ্গলকোট) আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, বিগত ১৬ বছরে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিটি নেতাকর্মী শত জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েও একটি আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মানের প্রয়াস থেকে থেমে যায় নি। আমরা আশা করেছিলাম ৫ আগস্টের পর থেকে দেশবাসী একটি নতুন বাংলাদেশের চিত্র দেখতে পাবে। এদেশ থেকে দুর্বৃত্তায়ন, চাঁদাবাজি, টেন্ডাবাজি ও মাদকের ব্যবসা দূরীভূত হবে। কিন্তু আমরা আশাহতভাবে লক্ষ্য করলাম একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল এখনো চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি ও ধর্ষণ ছাড়েনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ করে ১৬৬টি বিষয়ের মধ্যে ৮৬টি বিষয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ঐক্যমত পোষণ করে একটি জুলাই সনদ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু কিছুদিন পর বৃহৎ ঐ রাজনৈতিক দল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির প্রয়োজন নেই বলে জানায়৷ আমরা বলে দিতে চাই জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করতে হবে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে, বিগত সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করতে হবে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুমিল্লা লালমাই উপজেলার ভুশ্চি হাইস্কুল মাঠে ভূলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন জামায়াতের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুশিয়ার করে তিনি আরো বলেন, পূর্বে যেভাবে ছাত্রজনতা রাজপথে জীবনবাজি রেখে আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদকে দূর করেছে, আগামী দিনে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মানে নতুন করে ছাত্রজনতা আবার রাজপথে নামবে। এদেশের মানুষ অতীতে আ'লীগের শাসন দেখেছে, বিএনপির শাসন দেখেছে, জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছে এবার নতুন করে তারা জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমরাও জনগণকে আশ্বস্ত করছি, জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব জামায়াত নেতাদের হাতে তুলে দিলে আমরা এ জাতিকে দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ উপহার দিবো। আগামীতে জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে এই অঞ্চলে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন, আধুনিক ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি শিক্ষার প্রসার নিশ্চিত করা হবে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নেতারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করবে না বরং আমাদের নেতাদের জন্য বরাদ্দকৃত জনগণের টাকা কখন কোন খাতে খরচ করেছে তা ব্যানারে টানিয়ে জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে ইনশাআল্লাহ।

এ-সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন লালমাই উপজেলা জামায়াতের আমির মাও. আবদুন নূর, উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাও. এইচ এম নুরুল্লাহ, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী ইমাম হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারী মাও. মফিজুর রহমান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুল মোতালেব, উপজেলা জামায়াতের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাও. ইসমাইল হোসাইন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারী সাইফুল ইসলাম।

ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাও. রবিউল হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী আবু জাফরের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুব বিভাগের সহকারী সেক্রেটারী হেলাল উদ্দিন সুমন শিকদার, বেলঘর উত্তর জামায়াতের সভাপতি শাহ আলম, ভূলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী হাবিব রায়হান, উপজেলা যুব বিভাগের প্রচার সম্পাদক মাসউদ মজুমদারসহ ৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সেক্রেটারীবৃন্দ।