মালয়েশিয়া সফরে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহম্মদ ইউনূসের কাছে প্রত্যাশা অনেক। রাজনৈতিক সরকারের সময় মালয়েশিয়া শ্রমবাজার নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড দেখেছে গোটা জাতি।
মুহাম্মদ আহসান উল্যাহ (কুমিল্লা)
এক্সিকিউটিভ মেম্বার,
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা “আইন সহায়তা কেন্দ্র আসক ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশন” এর সেন্ট্রাল কমিটি।
এবার নিশ্চয়ই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, কর্মীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, এই আশা করা যেতেই পারে।
বিশেষ করে একটি ইস্যু দুই সরকার প্রধানের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। ভুয়া বা সাইনবোর্ড নির্ভর কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের নামে শত শত বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন বন্ধ করতে হবে। এই অনিয়ম হয় মালয়েশিয়া সরকারের মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে।
একজন কর্মী মালয়েশিয়া যাওয়ার পর যদি দেখেন, কোম্পানির অস্তিত্ব নেই, কাজ দেয়ার সক্ষমতা নেই, বেতনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তো দুঃস্বপ্ন। এরপর সেই কর্মীদের মানসিক নির্যাতন, শারীরিক নির্যাতন, পাসপোর্ট জব্দ থাকে কথিত নিয়োগদাতার কাছে। সেই পাসপোর্ট নিয়ে বাইরে চলে যাওয়ার জন্য দিতে হয়েছে কমপক্ষে ৫ হাজার রিঙ্গিত। আর বাইরে যাওয়া মানেই সেই কর্মী অনিয়মিত হয়ে গেলেন।
একজন কর্মী ৫ লাখ টাকা খরচ করে, দুই দেশের সরকারের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মালয়েশিয়া যাওয়ার পর যদি এই পরিনতি বরন করতে হয়, তাহলে বৈধ শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়াই মানবপাচারের মতো অপরাধ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। তাও আবার দুই দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।
তাই কোটা অনুমোদনের সময় অবশ্যই মালয়েশিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতে কোন একজন কর্মী এই ধরণের প্রতারণার শিকার হলে, সেই বিষয়ে প্রতিকারের জন্য মালয়েশিয়া সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে।
এই অনিয়মের পরের ধাপ হচ্ছে বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কল্যাণ উইং এর সত্যায়ন। মালয়েশিয়ায় আগের বার ২০২২ সালের ৮ আগস্ট থেকে যে করমীরা গিয়েছেন,
তাদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হাইকমিশন নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন না করেই চাহিদাপত্র সত্যায়ন করেছে। এবিষয়ে ২০২৩ সালের এপ্রিলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক মতবিনিময়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আনলে, দূতাবাস থেকে মন্ত্রণালয়ে জানায় যে, ‘মালয়েশিয়া সরকার কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে বলে দিয়েছে, বাংলাদেশ হাইকমিশন কোন কোম্পানি পরিদর্শন করতে পারবে না’।
এখন বিদেশী কর্মী নিয়োগের প্রথম দুটি ধাপ হচ্ছে দুই দেশের সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। আর শুরুতেই দুই সরকার অনিয়ম করছে বা অনিয়ম মেনে নিচ্ছে। এই বিষয়ে শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা করে সমাধান করা জরুরি। অন্যথায় পরবর্তীতে আরো বেশি কর্মী বৈধ ভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পর অবৈধ হয়ে যাবেন। (সংক্ষিপ্ত)
সচেতনতায়: প্রবাস তথ্যকেন্দ্র ।