স্থানীয় নির্বাচন হলে সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আর নেই- কুমিল্লায় আসিফ মাহমুদ
মোস্তফা কামাল মজুমদার কুমিল্লা প্রতিনিধি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যে সংশয় দেখা দিয়েছিল, তা অনেকটাই কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তার ভাষায়, এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তাতে করে আর নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই।
সোমবার (৯ জুন) ঈদের ৩য় দিন সকালে কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখন সে সম্ভাবনা নেই। কারণ প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন আয়োজনের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দিয়ে দিয়েছেন।”
স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জনগণ যেসব সেবা প্রত্যক্ষভাবে পায়, তার অধিকাংশই আসে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে। জনপ্রতিনিধি না থাকায় বহু এলাকায় সে সেবা কার্যত বন্ধ হয়ে আছে। এটা আমাদের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। সরকার শুরু থেকেই স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে আন্তরিক ছিল। এখন সেগুলো বাস্তবায়নের দিকে আমরা এগোচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় সরকারে একাধিক স্তর রয়েছে। কী পরিমাণ নির্বাচন আমরা আয়োজন করতে পারবো, তা নির্ভর করবে সময় ও প্রস্তুতির ওপর। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।”
এ সময় গণমাধ্যমের ভূমিকায় হতাশাও প্রকাশ করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাদেশ ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব এবং তা মূলধারার কিছু সংবাদমাধ্যমেও প্রতিফলিত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো নতুন কিছু নয়। কিন্তু যখন মূলধারার সংবাদমাধ্যমে এসব গুজব উঠে আসে, তখন জাতিগতভাবে আমরা একধাপ পিছিয়ে পড়ি।”
তিনি বলেন, “গুজবের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করা হলে পরে আমাদের আবার ফ্যাক্ট-চেক করে দেখতে হয়—আসলে কতটুকু সত্যি। এটা দুঃখজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। কিছু মানুষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এসব ছড়ায়, কেউ আবার ব্যক্তিগত আক্রমণ করে। আমার পরিবারের বিরুদ্ধেও এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে।”
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “মুক্ত গণমাধ্যম গণতন্ত্রের অংশ, তবে দায়িত্বশীলতা আরও জরুরি। আমরা চাই সবাই গঠনমূলক ভূমিকা রাখুক। সরকার গুজবের বিরুদ্ধে এবং সঠিক তথ্য প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এ সময় কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ পড়ুয়া, মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।