সিধুচীতে অনুষ্ঠিত হলো ঈদ পুনর্মিলনী ও শিক্ষাবিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মশালা
মুহাম্মদ আহসান উল্যাহ (লালমাই)
কুমিল্লা লালমাই উপজেলায় বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়ন সিধুসী গ্রামে শিক্ষিত সমাজ, সমৃদ্ধ গ্রাম”—এই শ্লোগানকে ধারণ করে সিধুচী গ্রাজুয়েট ফোরামের উদ্যোগে আজ ০৮/০৬/২০২৫ইং রোজ রবিবার অনুষ্ঠিত হলো ঈদ পুনর্মিলনী ও শিক্ষাবিষয়ক সচেতনতামূলক এক ব্যতিক্রমধর্মী কর্মশালা।
সিদ্ধান্ত, স্বপ্ন আর সচেতনতায় দীপ্ত এই আয়োজনটি সকাল ১০ টায় শুরু হয় সিধুচী হিযবুল্লাহ মহিলা দাখিল মাদরাসার অডিটোরিয়ামে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা সরকারি কলেজের প্রফেসর মুহাম্মাদ আরিফুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার এমফিল গবেষক ও ফোরামের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাজী মুহাম্মাদ ইসহাক জামিল। তিনি বলেন, “গ্র্যাজুয়েটরা শুধু সার্টিফিকেটধারী নয়—তারা সমাজের জ্ঞানের আলো, নেতৃত্বের প্রতীক। আমরা যদি একসাথে সচেতন হই, তবে একটি শিক্ষিত, সুশৃঙ্খল ও সমৃদ্ধ সিধুচী গড়া সম্ভব।”
মূল কী-নোট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পাঁচরুখি বেগম আনোয়ারা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুর রহমান। তিনি বলেন, “গ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থায় অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের সম্মিলিত ভূমিকা সময়ের দাবি। আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আজকের এই আলোচনা ও সচেতনতার ফলাফলের ওপর।”
ক্যারিয়ার গাইডলাইন সেশনে আলোচনায় অংশ নেন সোনাইমুড়ি ইব্রাহিম খলিল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও ফোরামের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, “শুধু পড়াশোনা নয়—আধুনিক যুগে পরিকল্পিত ক্যারিয়ার, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সময়ানুবর্তিতা তরুণদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয় অনুপ্রেরণামূলক ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা, যা উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— সম্মানিত উপদেষ্টা ও সিধুচী গ্রামের কৃতি সন্তান শায়খুল হাদীস ইউনুস খালেস, আল্লামা ওমর ফারুক মিয়াজি, প্রধান শিক্ষক মাস্টার হারেছ উদ্দিন, মাস্টার ইব্রাহিম খলিল, কার্যকরী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ কবির, সহ-সভাপতি মুফতী আলী হোসেন, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদ আলম, কোষাধ্যক্ষ সাইফুদ্দিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাওঃ হাবিবুর রহমান, সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোঃ আবুল খায়ের, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওঃ মিজানুর রহমান, সদস্যবৃন্দ: আবুল কালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির, বাবুল চন্দ্র দাস, মাওঃ মুহিব্বুল্লাহ, কাজী ইসমাইল, বিশিষ্ট সমাজসেবক মাহবুবুর রহমান, মোতালেব মিয়া প্রমুখ।
এছাড়া প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সমাজসেবক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনার পর সবার অংশগ্রহণে এক প্রাণবন্ত মতবিনিময় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
ফোরামের সভাপতি প্রফেসর আরিফুর রহমান সাহব বলেন, “আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন নিজের স্বপ্নের পথ নিজেই খুঁজে নিতে শেখে। আর অভিভাবকরাও হোক সহযাত্রী, শুধু পরিদর্শক নয়।”
অংশগ্রহণকারীরা জানান, এমন একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান নতুন করে শিক্ষার গুরুত্ব, সামাজিক বন্ধন এবং নিজ গ্রামকে নিয়ে ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে।
ফোরামের নেতৃবৃন্দ জানান, এই কর্মশালা শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়—বরং এটি ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস। তাঁরা বলেন, “আমরা চাই সিধুচীর প্রতিটি ঘরে শিক্ষা প্রবাহিত হোক, প্রতিটি তরুণ হোক আলোকিত ও সচেতন।”